ওসমানীনগর প্রতিনিধিঃ
সামাদ হোসেন মুরাদ—একটি নাম, যা শুধু সাফল্যের প্রতীক নয়, বরং সততা, মূল্যবোধ ও সমাজসেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ১৯৬৫ সালে সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলার ৩নং পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের বড় হাজিপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত, দানশীল ও ধর্মভিত্তিক পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা মরহুম মোঃ ইলিয়াস হুসেন ছিলেন একজন প্রগতিশীল চিন্তাবিদ এবং সমাজসেবক, যিনি ১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান।
পারিবারিক পরিবেশে ধর্মীয় অনুশাসন ও মানবিক মূল্যবোধে বেড়ে ওঠা সামাদ হোসেন মুরাদের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই শিক্ষা ও সমাজসেবার প্রতি ছিল গভীর আগ্রহ। বড় হাজিপুর জিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর তিনি ১৯৮২ সালে কাসিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় (ফেঞ্চুগঞ্জ) থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর সিলেটের এম.সি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ঢাকা জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে অনার্স সম্পন্ন করেন।
১৯৮৯ সালে তিনি পরিবারসহ যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান এবং সেখানে শুরু হয় তাঁর কর্মজীবনের নতুন অধ্যায়। প্রবাসে থেকেও সমাজের প্রতি তাঁর দায়িত্ববোধ ছিল অটুট। তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। বিশেষ করে খেলাধুলার প্রতি তাঁর অনুরাগ তাঁকে বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে একজন সুপরিচিত ক্রীড়া সংগঠকে পরিণত করে।
একজন সৎ ও দূরদর্শী ব্যবসায়ী হিসেবে সামাদ হোসেন মুরাদ যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তাঁর ব্যবসায়িক সাফল্য যেমন প্রশংসনীয়, তেমনি তাঁর নৈতিক অবস্থান ও সামাজিক অবদান আরও বেশি অনুপ্রেরণাদায়ক।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই পুত্রের জনক। তাঁর বড় ছেলে একজন অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার এবং ছোট ছেলে একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার—উভয়েই যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক মানের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে কর্মরত। এ সাফল্য নিঃসন্দেহে সামাদ হোসেন মুরাদের শিক্ষাদান, আদর্শ ও পারিবারিক মূল্যবোধেরই ফল।
নিজ জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, প্রবাসে থেকেও আমাদের শেকড়, সংস্কৃতি এবং সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ কখনোই ভুলে যাওয়া উচিৎ নয়। আমরা যেখানেই থাকি, দেশের প্রতি ভালোবাসা আর মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছাটাই আমাদের সত্যিকারের পরিচয়।
সামাদ হোসেন মুরাদের জীবনগাথা প্রমাণ করে সফলতা শুধু ব্যক্তিগত অর্জনে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা সমাজের জন্য কিছু করে যাওয়ার মধ্যে দিয়েই পরিপূর্ণতা পায়।